নয়া সবুজ চুক্তির আন্দোলনে যোগ দিন!

বাংলাদেশকে অবশ্যই তার নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে যাওয়ার পরিকল্পনা থেকে কয়লা ও গ্যাসকে বাদ দিতে হবে। এখনই সব ধরনের কয়লা প্রকল্প বাতিল করে সেই স্থানে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে।

 

ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য দূষণমুক্ত জ্বালানীর পথরেখাই হলো নয়া সবুজ চুক্তি। বৈষম্য ও জলবায়ু সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

আর অবশ্যই গ্যাস বাদ দিয়েই হতে হবে বাংলাদেশের নয়া সবুজ চুক্তি । এই চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকাকে দেশের সকল প্রকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র বাতিল করার আহবান জানিয়েছে । এইসব প্রকল্প বাতিল করে সেইসব স্থানকে এখনই সৌরবিদ্যুত প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা উচিত। আর ওই পথে হাটলে ২০৫০ সালের ভেতর শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে রূপান্তর ঘটানো যাবে।

বাংলাদেশের নয়া সবুজ চুক্তি এটা বিবেচনায় নিয়েছে যে, দেশের বিদ্যুতের আওতা বাড়ানো, দারিদ্র দূরিকরণ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতার ( অভার ক্যাপাসিটি) সমস্যাকে বিবেচনা করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানীকে গ্রহণ করার পথরেখাটিকে অবশ্যই হাতে হাত রেখে চলতে হবে। এটা সরকারের সাফল্য যে, গত এক দশকে ৪০ লক্ষ পরিবার ও প্রান্তিক অঞ্চলের ২ কোটি মানুষের কাছে সৌর বিদ্যুত ব্যবস্থা পৌঁছে দিয়েছে।

নয়া সবুজ চুক্তির প্রচারণাটি কয়লা বিদ্যুৎ বাতিল করার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রস্তাবনাটিকে বাংলাদেশের জন্য আরো ভাল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে একটি বহুল প্রতিক্ষীত ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখে। কিন্তু সত্যিকারের উপকার পেতে হলে এই প্রস্তাবনায় আরো কিছু উন্নতি সাধন করতে হবে। কয়লা থেকে এলএনজি গ্যাসে গেলে পরিস্থিতি একই থাকবে। প্রাকৃতিক গ্যাস থেকেও কয়লার মতোই ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরন হয় । বিদ্যুত ব্যবস্থার জন্য কয়লা থেকে গ্যাসের দিকে না গিয়ে, বাংলাদেশের জন্য সঠিক পথ হচ্ছে এখনই নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে রূপান্তরিত করা ।

যেখানে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল তীব্র হচ্ছে, সেখানে আমরা কেবল বাস্তবসম্মত জলবায়ু সমাধানের উপর নির্ভর করতে পারি এবং গ্যাস- একটি জীবাশ্ম জ্বালানী – যা কখনোই সমাধানের অংশ না।  নির্মানাধীন কয়লা প্রকল্পগুলোকে যদি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় তাহলে কার্বন নিঃসরন কোন ভাবেই কমবে না এবং প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না।

নয়া সবুজ চুক্তির এখনই সময়

#GreenNewDealBD

নিজের নাম যোগ করুন

বাংলাদেশে একটি নতুন সবুজ চুক্তির সমর্থনে আহবান

বাংলাদেশে একটি নতুন সবুজ চুক্তি বাস্তবায়নে ২০২১ সালে আমাদের আন্দোলন গড়ে তুলতে বড় ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। 

বাংলাদেশে একটি নতুন সবুজ চুক্তি বাস্তবায়নের দাবির সাথে আপনার সংহতি ও সমর্থন জানানোর পাশাপাশি এই প্রচারাভিযানের সাথে সম্পৃক্ত হতে নিবন্ধন করুন। বাংলাদেশের প্রত্যেকেরই এই আন্দোলনে ভূমিকা রয়েছে। আগামী ৬ মাসে আমরা অনলাইন মিটিং, দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ, চিত্রকলা (আর্ট) কর্মশালা, স্মারকলিপি পেশ এবং গনপ্রচারের মাধ্যমে দাবির স্বপক্ষে চাপ বৃদ্ধি করব।

বাংলাদেশের জন্য গ্যাসবিহিন একটি নতুন সবুজ চুক্তি


সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বাতিল করার প্রস্তাব দিয়েছেন যা বাংলাদেশের কার্যকর জ্বালানী খাতের জন্য একটি সুদুরপ্রসারি ইতিবাচক পদক্ষেপ বটে। কিন্তু কয়লা থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসে (এলএনজি) ফিরে যাওয়ার ফলাফল হবে শুন্য। প্রাকৃতিক গ্যাসেও কয়লার মত একই মাত্রার নির্গমন ঘটবে। কয়লার বদলে গ্যাসে না ফিরে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সঠিক রুপান্তর ঘটাতে পারে। 

বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানী বা ফসিল ফুয়েল অর্থাৎ তেল, গাস, কয়লা নির্ভর অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্তের থেকে সরে আসতে হবে। ভবিষ্যতের যেকোন জ্বালানী সংক্রান্ত মহাপরিকল্পনায় (মাস্টার প্লান) থেকে কয়লা বা প্রাকৃতিক গ্যাসকে-এলএনজি বাদ দিতে হবে। সরকারের প্রস্তাবিত বা নির্মানাধীন সকল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতির বাতিল করতে হবে। এই কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০২৫ সাল নাগাদের মধ্যে স্থাপন করে কার্যকর করা যাবেনা। ২০৫০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালিয়ে খাতে শুন্য নির্গমন নিশ্চিত করতে হলে আমাদের সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানী নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রসমূহ বাতিল করে শতভাগ নবয়ায়নযোগ্য শক্তিতে সঠিক রুপান্তর ঘটাতে হবে। 

জলবায়ু সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি ২০৫০ সালের শতভাগ নবায়নযোগ্য শক্তিতে রুপান্তর ঘটাতে পারে এর জন্য বাংলাদেশকে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য গ্যাসবিহিন একটি নতুন সবুজ চুক্তি

Hi !

We have your info saved from last time, just click the button below to continue.

এই পদক্ষেপ গ্রহন দ্বারা , আপনি আমাদের সেবা পাবার সেবা পাবার শর্ত এবং গোপনীয়তা নীতি মেনে চলবেন । আপনি যেকোনো সময় সাবস্ক্রাইব বন্ধ করতে পারবেন ।

এই পদক্ষেপ গ্রহন দ্বারা , আপনি আমাদের সেবা পাবার শর্ত এবং গোপনীয়তা নীতি মেনে চলবেন । আপনি যেকোনো সময় সাবস্ক্রাইব বন্ধ করতে পারবেন ।

গ্যাস ‘ব্রিজ ফুয়েল’ মিথ

এলএনজি যেসব বাড়তি সমস্যা তৈরি করবে বাংলাদেশের এ ব্যাপারে চিন্তাশীল হওয়া উচিত। যদি আমরা গ্যাসের সমগ্র উৎপাদন চক্রটিকে বিবেচনা করি, তাহলে দেখবো এর নিঃসরণ কয়লার সমান। কয়লা থেকে গ্যাস এবং গ্যাস থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহারের দিকে যাওয়ার পরিবর্তে, বাংলাদেশ এখনই সরাসরি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেতে পারে।

কেবল গ্যাসই সাশ্রয়ীভাবে কয়লাকে মধ্যমেয়াদে প্রতিস্থাপন করতে পারে, এমন একটি ভুল দাবীর উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে ব্রিজ ফুয়েলের মিথটি। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতগুলো যখন তীব্র হচ্ছে, এটা পরিস্কার যে গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানী কোন জলবায়ু সমাধান নয়। তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে স্রেফ গ্যাস পোড়ানো থেকে যে পরিমাণ গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে সেটি জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রাকে বিচ্যুত করার জন্য যথেষ্ট।

গ্যাস যে কোন বিশুদ্ধ, সস্তা জ্বালানী নয় এবং এটি আবশ্যকও নয় তা এই পাচটি পয়েন্ট থেকেই পরিস্কার হয়:

১. গ্যাস কার্বন বাজেটকে ছাড়িয়ে যায়:

তেল, গ্যাস কয়লা উভয়ই বিদ্যমান এবং নির্মাণাধীন খনিজ উত্তোলনের প্রকল্পগুলো দুনিয়াকে নিরাপদ জলবায়ু সীমা থেকে বহুদূরে নিয়ে যাবে। আরও অনাবিষ্কৃত গ্যাস রিজার্ভের উন্নয়নের বিষয়টি প্যারিস চুক্তির জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং সেটি পৃথিবীর তাপমাত্রাকে অফেরত যোগ্য ভাবে উষ্ণ করে তুলবে।

২. কয়লা থেকে গ্যাসে গেলে কমবে না:

জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের জন্য প্রয়োজন জ্বালানী খাতকে মধ্য শতাব্দী নাগাদ অকার্বনীকরণ করা। এর মানে হল কয়লা এবং গ্যাস উভয়কে অবশ্যই পর্যায়ক্রমে বাদ দিতে হবে। কয়লার প্লান্টগুলোকে গ্যাসের প্লান্ট দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হলে নিঃসরণকে যথেষ্টভাবে কমাবে না, এমনকি মিথেন লিকেজকে (যেটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে) সর্বনিম্ন রাখা হলেও।

৩. কয়লা ও গ্যাসের বিকল্প হতে পারে কম-খরচের নবায়নযোগ্য জ্বালানী

নাটকীয় ভাবে বায়ুবিদ্যুৎ সৌরবিদ্যুতের ক্ষেত্রে খরচ দিন দিন কমার বিষয়টি বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের বাণিজ্যিক মডেলে বাধা তৈরি করে।অবসরে যেতে চলা জীবাশ্ম জ্বালানীর সক্ষমতাকে প্রতিস্থাপন করার ক্ষেত্রে বায়ুবিদ্যুৎ এবং সৌরবিদ্যুৎ একটি ক্রমবর্ধমান ভূমিকা রাখবে এবং স্রেফ নাবয়নযোগ্য  জ্বালানীতে বিনিয়োগ করেই  বাংলাদেশ এই খেলায় এগিয়ে থাকতে পারে।

৪. গ্রিড নির্ভরযোগ্যতার জন্য গ্যাস অত্যাবশ্যক নয়:

বায়ুবিদ্যুৎ এবং সৌরবিদ্যুতের জন্য প্রয়োজন গ্রিড ভারসাম্য বজায় রাখা, কিন্তু এজন্য গ্যাসই একমাত্র ও সর্বোত্তম উৎস নয়। গ্রিড নির্ভরযোগ্যতার উদ্দেশ্যে যেসব গ্যাস প্ল্যান্টের নকশা করা হচ্ছে তার সাথে দ্রুতই প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে ব্যাটারি স্টোরেজ। বিস্তৃত পরিসরের প্রযুক্তি ও সমাধান বিদ্যমান গ্রিডে উচ্চমাত্রার বায়ুবিদ্যুৎ ও সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থাপনা করার জন্য গ্যাসকে প্রথম সমাধান হিসেবে পছন্দ করার কোন কারণ নেই।

৫. গ্যাসের নতুন অবকাঠামো নিঃসরনে আবদ্ধ

বহুবিলিয়ন ডলারে যে গ্যাসের অবকাঠামোগুলো বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে সেগুলোর নকশা করা হয়েছে কয়েক দশক ধরে চালানোর জন্য, যা বাংলাদেশের কার্বণ নিঃসরণকে নিয়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে অবাস্তবসম্মত বিনিয়োগের দিকে। প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক মেয়াদের আগেই অবকাঠামোগুলোকে বন্ধ করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাগুলো থাকার পরিস্থিতিতে, নতুন অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ করাটা জটিল।

কয়লা এবং প্রস্তাবিত এলএনজি শক্তির দিকে যাওয়া নিয়ে বাংলাদেশের যে প্রাথমিক পরিকল্পনা সেটি “তাৎপর্যপূর্ণভাবে অতিরিক্ষ সক্ষমতা”র দিকে ধাবিত হবে। এর মানে হল এই যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কম মুনাফা করবে এবং কয়লাবিদ্যুতের দাম বাড়ানোর দিকে ধাবিত হবে।

Source: Oil Change International

অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা (ওভারক্যাপাসিটি সমস্যা)

অতিরিক্তি উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এই সক্ষমতা সংশ্লিষ্ট চার্জ বিপিডিবি’র আর্থিক বোঝা বাড়াবে এবং তা সরকারের উচ্চমাত্রার ভর্তুকির সম্ভাবনাও বৃদ্ধি করবে অথবা সরকারকে বিদ্যুতের মূল্য বাড়াতে হবে।

যদি বাংলাদেশ তার বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যুক্ত করে তবে ২০৩০ সালে দেশটির  বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি হবে। অন্যদিকে এই অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতার কারণেই নতুন কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার হবে না। ফলে ব্যয়বহুল এই সম্পদ দীর্ঘসময় অলস পড়ে থাকবে। অন্যদিকে এই উৎপাদন সক্ষমতার বিপরীতে ভর্তুকি দিতে হবে কিন্তু কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে না। 

 ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে যার ফলে অলস পড়ে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য মোটা অংকের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৪৩ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছিল, যেখানে একই অর্থবছরে ওই অলস পড়ে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কারনে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতার সঙ্গে যদি অতিরিক্ত আরও বিদ্যুৎকেন্দ্র যুক্ত হয় তবে তা নিশ্চিতভাবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত দেশকে অতিরিক্ত উচ্চ পর্যায়ের ওভারক্যাপাসিটির চক্রের দিকে নিয়ে যাবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী বলেছেন, কোভিড-১৯ দেশের অর্থনীতির ওপর যে প্রভাব ফেলেছে, তাতে বিদ্যুতের চাহিদা ও রাজস্ব আয় দুটোই কমছে এবং এতে বিপিডিবি আরো বড় অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। এমনকি কোভিড-১৯ পরিস্থিতির আগে থেকেই বিপিডিবি বড় ধরনের লোকসানে ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিপিডিবিকে দেয়া সরকারের ভর্তুকি ছিল ৮ হাজার কোটি টাকা। উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রি এবং লোকসান সামলানো ও নগদ অর্থের ঘাটতি মেটানোর জন্য এ ভর্তুকি দিতে হয়েছে। মহামারী শুরুর আগে বিপিডিবি মনে করেছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য তাদের ৯ হাজার কোটি টাকা (১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ভর্তুকি প্রয়োজন হবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানীই বাংলাদেশের একমাত্র পথ

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতকে নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে রূপান্তরের জন্য নতুন করে সৌর বিদ্যুত প্রকল্পের একটি খসড়া পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( স্রেডা ) ২০৪১ সালের ভেতর সৌর বিদ্যুত প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তাব রাখা হয়েছে এই খসড়া পরিকল্পনায়।

নবায়নযোগ্য জ্বালানী উন্নয়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলে বাংলাদেশে নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জনের গতি শ্লথ হয়ে যাবে। কেননা কয়লা এবং এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর তুলনায় সৌরভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কাঠামো তুলনামূলক ছোট এবং বিকেন্দ্রিক যা কিনা বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় প্রবণতাকে বন্ধ করবে।

উপরন্ত সৌর বিদ্যুত এখন সস্তা, সুতরং উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরচ কমাতে সাহায্য করতে পারে। নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে ভারত ইতিমধ্যে এর সুফল পেয়েছে এবং নাটকীয় ভাবে কমেছে সৌর বিদ্যুতের শুল্কের হার। সৌর প্রকল্পে ব্যবহৃত ব্যাটারির দামও দ্রুত কমছে।

বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিশ্রুতি হচ্ছে কম খরচে বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারা। যার ফলে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিতে হবে না ও শুল্ক ( ট্যাক্স) বৃদ্ধিরও প্রয়োজন পড়বে না।

সৌরবিদ্যুত প্রকল্পের পাশাপাশি পাওয়ার গ্রিড উন্নত করার দিকেও নজর দিতে হবে।  এর ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর সক্ষমতা আরো বাড়বে এবং বিদ্যুত সঞ্চাল বিতরনের ক্ষেত্রে অপচয় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। একটি উন্নত মানের পাওয়ার গ্রিড বিদ্যমান ধারন ক্ষমতার আরো ভালো ব্যবহার করতে পারে। যেসব এলাকায় চাহিদা কম থাকায় কেন্দ্রগুলো অলস পরে থাকে সেসব এলাকায় সরবরাহ কমিয়ে যেসব এলাকায় চাহিদা বেশি আছে সেখানে সরবরাহ করা। শুধু তাই না অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতার সমস্যাগুলিও শনাক্ত করে সমাধানের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সরকারের উচিত কয়লা প্রকল্প এবং প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক জ্বালানী প্রকল্পের বদলে সেই স্থানে নবায়নযোগ্য জ্বালানী প্রকল্প স্থাপন করা। এতে বাংলাদেশের সৌর বিদ্যুত এবং বায়ু বিদ্যুতের উপযোগিতা কার্যকর ভাবেই বৃদ্ধিপাবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানীর শুল্কহ্রাসের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে।

এর বাইরেও সৌরবিদ্যুত প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য আরো অনেক ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) প্রস্তাবনায় পরিস্কার ভাবে দেখানো হয়েছে সৌর বিদ্যুত থেকে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব। আর যার ভেতর ছাদগুলিকে অবশ্যই এই প্রকল্পের ভেতর নিয়ে আসা। স্রেডার মতে ৩০ হাজার মেগাওয়াটের ভেতর ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আসবে ছাদে স্থাপিত সৌর বিদ্যুত প্রকল্প থেকে।

FacebookTwitter